Brainmindia

bengali

মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রেখে কিভাবে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব?

How is Suicide Prevention possible keeping Good Mental Health? Author : Dr. Jakir Hossain Laskar, PhD প্রায় সমস্ত দেশেই প্রথম দশটি মৃত্যুর কারনের মধ্যে আত্মহত্যা একটি। প্রতি পাঁচজন মানুষের মধ্যে একজন জীবনের কোনও না কোনও সময়ে আত্মহননের কথা ভাবেন। আত্মহত্যা কোনও অপরাধ নয় -মনের এক গভীর অসুখ। এর নিবারণে ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে লিখেছেন ডাঃ জাকির হোসেন লস্কর। আধুনিক বিশ্বে সর্বব্যাপী নৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ের জন্যে সুস্থ মানসিক চিন্তাশক্তি ক্রমে ক্রমে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে আমাদের জীবনচর্যা থেকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আর সদর্থক মূল্যবোধগুলো তিল তিল করে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ঘরে-বাইরের প্রবল মানসিক চাপে মানসলোকের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে আমরা চূড়ান্ত নেতিবাচক পরিমানের শিকার হচ্ছি। ফলশ্রুতিতে কেউ কেউ বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার অন্ধকূপ। বিশ্বজুড়ে আত্মহত্যার পরিসংখ্যান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, কম-বেশি ৪০-৪৫ কোটি মানুষ সারা বিশ্বে বর্তমানে মানসিক অবসাদের শিকার। বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেন। আর আত্মহননের চেষ্টা করেন প্রায় ২ কোটি মানুষ। তথ্য প্রমান থেকে জানা যাচ্ছে, প্রতিদিন কম-বেশি ৪-৫ হাজার নারী-পুরুষ অসহনীয় মনসিক অবসাদের কারণে আত্মহত্যার চূড়ান্ত পথ বেছে নেন। মানসিক অবসাদের চাপে চুরমার হয়ে যাচ্ছে আমাদের ব্যাক্তিগত জীবনের আশা-আকাঙ্খাগুলো, ভেঙ্গে যাচ্ছে সুস্থ মানবিক সম্পর্ক।  লেখাপড়ার চাপে বর্তমানে ছাত্রছাত্রীরা ক্লান্ত ও অবসন্ন। জীবন ও জীবিকার চাপে তাদের বাবা মায়েরাও আজ বিধ্বস্ত এবং অবসাদগ্রস্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ২০২৫-২০৩০ সালের মধ্যে ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজের পরে দ্বিতীয় স্থানটি দখল করবে মেন্টাল ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদ নামক রোগটি। ক্যানসার, এইডস্‌ ইত্যাদি নানান মারনব্যাধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এদের সবাইকে পরাস্ত করে ২০৩৫ সালের মধ্যে এই মানসিক অবসাদ রোগের আনুপাতিক গুরুত্বের বিচারে প্রথম স্থানটি দখল করতে চলেছে। বর্তমান শতাব্দীতে সর্বগ্রাসী অবসাদের প্রভাবে আত্মহত্যার প্রবনতা যেভাবে মহামারীর আকার নিচ্ছে, দুনিয়াজোড়া সেই সংকটকে মাথায় রেখে ২০১৭ সালে বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসের (১০ সেপ্টেম্বর) স্লোগান রাখা হয়েছে – ‘টেক আ মিনিট, চেঞ্জ আ লাইফ’ অর্থাৎ সামান্য সহমর্মিতা ও সমবেদনা জ্ঞাপনের মাধ্যমে আত্মহত্যার মরনফাঁদ থেকে একজন মানুষকে বাঁচানো যায়। মানসিক অবসাদ চিনবেন কী করে অবসাদের কবলে পড়ে মানুষ চূড়ান্ত হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। দৈন্দনিন কাজকর্মের আগ্রহ কমে যায়। আনন্দ পাওয়ার অনুভূতি ভোঁতা হয়ে যাওয়ার কারণে কোনও কিছুই আর একদম ভালো লাগে না। রোগীর মনের অবস্থা এতটাই নেতিবাচক হয়ে ওঠে যে, তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন, এই হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতির আর কিছুতেই পরিবর্তন হবে না। সব কিছুতেই খিটখিটে মেজাজ, বিরক্তিভাব, ভিতরে ভিতরে চূড়ান্ত অস্থিরতা গ্রাস করে। অসম্ভব ক্লান্তি ভাব, কোনও কাজে মনঃসংযোগ ধরে রাখতে পারে না। জীনবে ঠিকঠাক সিদ্ধান্ত নিতেও ভূল করে বসে। সারাদিন শুয়ে বসে কাটাতে মন চায়। খিদে ও পিপাসা কমে যায়। রাতে ছটফট করে, ভালো করে ঘুমাতে পারে না। রোগী বিশ্বাস করতে শুরু করে, তারই দোষে সংসারের আজ এই হাল। ভাবতে থাকে, আমি মরে গেলে সংসারের সবার কল্যাণ হবে, মঙ্গল হবে। কেউ কেউ মৃত্যুচিন্তায় উদ্বেল হয়ে ওঠেন। ভাবেন, কোনও মতে এ পৃথিবী থে কে বিদায় নিতে পারলে আমার শান্তি। রোগী যখন অবসাদগ্রস্ত অবস্থা আর সহ্য করতে পারে না, তখন আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে পড়ে। তখন তাঁর ভিতরকার অস্থিরভাব হঠাৎ করে স্তিমিত হয়ে আসে। তখন এমনকী তাঁরা নিজের প্রিয় জিনিসটিও অন্যকে ডেকে দিয়ে দেন। মানুষ কী কারণে ও কেন আত্মহত্যা করে ব্যক্তিত্বের বিকার থেকে মানুষ যখন তাঁর সহজাত জৈবিক চাহিদাগুলোকে পরিপূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়, তখন ধীরে ধীরে তাঁর মধ্যে দেখা দেয় বিষণ্ণতা, হতাশা, অপরাধবোধ, উৎসাহহীনতা, কর্মবিমুখতা ও আত্মহননের ইচ্ছে। ধর্মীয় ও নানারকম আর্থ-সামাজিক কারনে মানসিক অবসাদ আমাদের গ্রাস করে, আমাদের মনের আকাশ ছেয়ে যায় অবসাদের কালো মেঘে। বেকারত্ব, দারিদ্র, ঋণগ্রস্ত অবস্থা, সাম্প্রতিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ক্রমাগত মানসিক চাপ, বৈবাহিক জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি ও দাম্পত্যকলহ অবসাদের কারন হয়ে দেখা দেয় ও পরিণতিতে আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটতে থাকে। একাকীত্ব-জনিত নিঃসঙ্গতা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের অবসাদের অন্যতম কারণ। পারিবারিক বা অর্থনৈতিক নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে বৃদ্ধ বয়সে অনেকেই মনোবিকার বিশেষত মানসিক অবসাদের কবলে পড়েন। ছেলে-বউমার সংসারে স্বাধীনতাহীন অবস্থায় বেঁচে থাকার যন্ত্রণায় বেশি বয়সের অবসাদগ্রস্ত অবস্থা আত্মহত্যার কারন হয়ে দেখা দেয়। দীর্ঘকাল যন্ত্রণা ও বেদনাদায়ক কঠিন অসুখে ভুগলে অবসাদ আসে। মদ্যপান, ড্রাগ ইত্যাদি নেশার সামগ্রী অত্যধিক সেবনে অবসাদ দেখা দেয়। মাদকাসক্তের মধ্যে তাই মানসিক অবসাদের কারনে আত্মহত্যার প্রবনতা বেশি। ‘স্মাইলিং ডিপ্রেশন’ নামের একটি শব্দবন্ধ অনেকেই হয়ত শুনে থাকবেন। অনেক ডিপ্রেশনের রোগী থাকেন যারা অবসাদ লুকিয়ে বাইরে হাসিমুখে থাকেন, রাস্তায় দেখা হলে জিজ্ঞাসা করলে বলেন – তিনি সুখে ও আনন্দে আছেন। আত্মহত্যা জাতীয় কোনও মারাত্মক অঘটন না ঘটলে বোঝাই যায় না যে তিনি আসলে কতটা অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। এছাড়া, ব্যক্তির কামনা-বাসনার সঙ্গে তাঁর প্রকৃত সামর্থের সামঞ্জস্য না থাকলে মানসিক অবসাদ দেখা দিতে পারে। বর্তমান যুগে সর্বাত্মক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবক্ষয় আমাদের অন্ধকার জগতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নানাবিধ অবক্ষয়ের প্রকোপে আমাদের সন্তান-সন্ততিরা বিকৃতির দীক্ষা পেয়ে যাচ্ছে। তাদের অবচেতন মনে  গৃহীত সেইসব বিকৃতির প্রভাবে ক্রমশ তারা উৎকণ্ঠা ও উত্তেজনায় উথালপাথাল হতে থাকে। মানসিক এই স্বাস্থ্যহানির কারণে কেউ কেউ অপরাধপ্রবণ হয়ে অবশেষে অসামাজিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়। কেউবা আবার বাস্তব থেকে পালিয়ে কল্পনার জগতে বাস করতে করতে স্কিজোফ্রেনিয়ায় (অলীক কাল্পনিক বাতুলতা রোগবিশেষ) আক্রান্ত হয়ে পড়ে। অনেকে আবার না পাওয়ার হতাশা-জনিত কারণে মানসিক বিষণ্ণতায় আত্মহননের পথ বেছে নেয়। আত্মহত্যা সংক্রান্ত জ্ঞাতবা কিছু তথ্য ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরো-র রেকর্ড অনুযায়ী আমাদের দেশে ২০০৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে সর্বাধিক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। সরকারি তথ্য প্রমাণ অনুযায়ী, ভারতবর্ষে প্রতি বছর ৭০ থেকে ৭৫ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী পুরুষদের মধ্যে আত্মহননের ঘটনা নারীদের তুলনায় তিনগুণ বেশি। আর নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার চেষ্টা করার প্রবনতা পুরুষদের তুলনায় চারগুণ বেশি। বিবাহিত দম্পতিদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবনতা তুলনামূলক কম, পক্ষান্তরে বয়স্ক অবিবাহিত, বিধবা বা বিপত্নীকদের মধ্যে আত্মহত্যার হার অনেক বেশি। সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে অবশ্য বিবাহ-বিচ্ছিন্নাদের ক্ষেত্রে। বর্তমানে ছাত্রছাত্রী, পুলিশকর্মী ও সেনা জওয়ানদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা প্রচণ্ড হারে বাড়ছে। মনোরোগ গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, যাঁরা আত্মহত্যা করেছেন তাঁদের মধ্যে ৬০-৬৫ শতাংশ মানুষ আত্মহত্যা করার আগে মনোচিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন এবং আকার-ইঙ্গিতে নিজের জীবন নিয়ে হতাশার কথা ডাক্তারবাবুকে জানিয়েছিলেন। আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষজন মৃত মানুষদের নিয়ে বারংবার আলোচনা করতে পছন্দ করেন, মানুষ কীভাবে মারা যায় তা নিয়েও আলাপ-আলোচনা করতে ভালোবাসেন। তাঁর মধ্যে হঠাৎ করে চুপচাপ একা থাকার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। কালক্রমে অবসাদ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলে মানুষ আত্মহত্যার কথা ভাবে। আত্মহত্যা নিবারণে আমাদের সামাজিক দায়িত্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধে আমাদের অনেক কিছু করণীয় আছে। মানসিক অবসাদ কাটাতে কোনও কথাই নিজের মধ্যে গোপন করে রাখবেন না। সমমর্মী কাউকে আপনার মানসিক দুরবস্থার অংশীদার করে নিন। অবসাদে নিমজ্জিত ও হৃদয় মননে জর্জরিত মানুষকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে যে, বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা সবাই তাঁর পাশে আছেন ও তাঁর বিষণ্ণতা ও অবসাদের কারন অনুসন্ধান করে, তার থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে নিকট আত্মীয় পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সকলে ঐকান্তিক প্রয়াস করছেন।

bengali

মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার করলে কি কি সমস্যা হতে পারে?

How is Health adversely affected for excessive Mobile Use?  Author : Dr. Jakir Hossain Laskar, PhD মোবাইল ফোন ছাড়া এযুগে জীবন অচল। কিন্তু এই ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে যে সব স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে, সে ব্যাপারে সচেতন থাকাও জরুরী। প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা আমাদের অনেক বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে। কথা বলা ছাড়াও ইন্টারনেট ব্যবহার, গান শোনা, ভিডিও দেখা, ছবি তোলা, মিনি-কম্পিউটার হিসাবে মোবাইল ফোনের ব্যবহার সুবিদিত। সবার হাতে হাতে তাই আজ সুদৃশ রঙিন নানান রকমের সেলুলার ফোন। কিন্তু আমাদের জেনে রাখা দরকার ইলেক্ট্র-ম্যাগনেটিক রশ্মি বিচ্ছুরণের কারণে উদ্ভুত শারীরিক ও মানসিক সমস্যা গুলো থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায়। শারীরিক ও মানসিক সমস্যা ১. রেডিয়েশান কার্সিনোজেনিকঃ দ্য ইন্টারন্যাশানল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার-এর গবেষনা লব্ধ সিদ্ধান্ত হল, মোবাইল ফোনের রেডিও-ফ্রিকোয়েন্সি খুবই উচ্চমানের কার্সিনোজেনিক (ক্ষতিকারক)। এই রেডিওশান থেকে ব্রেন ক্যানসার ও চোখের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ২. কানের সমস্যাঃ ফোনে একটানা অনেকক্ষণ কথা বলতে অভ্যস্ত যারা, তাদের ইনার ইয়ার ড্যামেজ ও ককলিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া হেয়ারিং লস্‌-এর সমস্যা ও হতে পারে। ইউরোপের ‘বায়োইলেক্ট্রম্যাগনেটিক্স’-এর একদল বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বাঁদিকের কানে ফোন ধরে কথা বলতে। এতে ব্রেনের ক্ষতি কম হয়। এই মত সমর্থন করে অ্যামেরিকান অ্যাকাডেমি অফ অটোল্যারিঞ্জোলজি-এর গবেষকরা জানিয়েছেন, ডানদিকের কানে ফোন ধরে কথা বললে মস্তিষ্কে সরাসরি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ৩. ব্রেন ডিজিজঃ মোবাইল ফোনের বিচ্ছুরণ থেকে মাথায় যন্ত্রণা, মাথা-ঘোরা ছাড়াও ব্রেন টিউমারও হতে পারে। অ্যাকাউস্টিক নিউরোমা, ম্যালিগন্যান্ট গ্লিয়োমা ইত্যাদির সম্ভাবনার কথা ও গবেষক মহলে জোর চর্চা হতে শোনা যায়। উল্লেখ্য, এইসব বিভিন্ন ধরনের ব্রেন-টিউমার হবার প্রবণতা বড়দের থেকে ছোটদের বেশি থাকে। সুইডেন-এর ওরিব্রো হসপিটাল-এর গবেষনা থেকে জানা যাচ্ছে- ছোটদের ব্রেন-এর ‘স্কাল বোন ডেনসিটি’ কম থাকে আর ‘ব্লাড ব্রেন ব্যারিয়ার’ কম কার্যকরি থাকে বলে তিনগুন বেশি রেডিয়েশান শোষন করতে পারে। ছোট ছেলে-মেয়েদের তাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে না দেওয়ায় বুদ্ধিমানের কাজ। ৪. হোয়াটস অ্যাপাইটিসঃ নববর্ষে হোয়াটস অ্যাপ সার্ভিসের মাধ্যমে প্রিয়জন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব দের আপনি ঘন্টার পর ঘন্টা ম্যাসেজ করলেন। সন্ধ্যাবেলা দেখলেন আপনার কাঁধ-কবজি-ঘাড়ে খুব ব্যাথা-যন্ত্রণা হতে শুরু করেছে। ৫. চোখ ও দৃষ্টিশক্তি সমস্যাঃ অনেকক্ষন ধরে মোবাইলে নেট ঘাঁটলে নানাবিধ স্ক্রিন ভিশন সিনড্রোম দেখা দেয়। যেমন, চোখ লাল হওয়া ও জ্বালা ভাব, আই-স্ট্রেন, ড্রাই-আই, আই ইরিটেশন, ঝাপসা দৃষ্টি, রাতকানা ইত্যাদি হতে পারে। ৬. রিপ্রোডাক্টিভ সিস্টেম–এর সমস্যাঃ মোবাইল ফোন থেকে নিঃসৃত হয় পারফ্লুয়উরো-অকট্যনোইক অ্যাসিড নামক এক ক্ষতিকারক কেমিক্যাল, যা থেকে স্ত্রী জননতন্ত্রের কার্যক্ষমতা ব্যহত হয়। এর থেকে এমনকি ইউটেরাস, ওভারি, ফ্যালোপিয়ান টিউব ইত্যাদির ঘঠনতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। সন্তানধারন কালে যে সমস্ত নারী অত্যধিক মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, তাদের ভূমিষ্ঠ সন্তান পরবর্তীতে এ।ডি।এইচ।ডি-র মত বিহেভিয়ার প্রবলেমের শিকার হতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন, স্পার্ম কাউন্ট ও স্পার্ম মটিলিটি কমে যেতে পারে, এমনকি অক্সিজেন-সমৃদ্ধ রিয়াক্টিভ মলিউকিলার প্রজাতির স্পার্মগুলোর ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড ড্যামেজ হয়ে স্পার্ম মরফোলজি বিকৃত হয়ে যেতে পারে। ৭. মানসিক সমস্যাঃ অত্যধিক সেলুলার ফোন ব্যবহার থেকে মানসিক ক্লান্তি, ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদ, ইনসমনিয়া বা ঘুমের সমস্যা হতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তির ধারণক্ষমতা কমে যাওয়ার ঘটনা ও ঘটতে পারে। ৮. রিং-টোন অ্যাংজাইটিঃ মাত্রাধিক মোবাইল আসক্তির কুফলে এই মানসিক সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যাক্তি ছোটখাটো যে কোনো শব্দে সতর্ক হয়ে পড়ে, ভাবে, মনে হয় তার মোবাইলের রিং-টোন বাজছে। অনেকে এমনও আছেন, এক-দু’ঘন্টা ফোন না আসলে যারপরণাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। ৯. নো-মোবাইল ফোবিয়াঃ ব্যাক্তিগত জীবনের যাবতীয় তথ্য, দরকারী কন্ট্যাকট নাম্বার ইত্যাদি সবই এখন মোবাইলে রাখা থাকে। এই আতঙ্কে আক্রান্ত ব্যাক্তি সর্বদা ভয়বিহ্বল হয়ে থাকে, এই বুঝি তার সেলফোনটা হারিয়ে গেল। ১০. সোশ্যাল সাইট অ্যাডিকশনঃ জনপ্রিয় স্মার্ট ফোনের কল্যানে আমরা ফেসবুক, ট্যুইটার, লিংকইন, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াস্টঅ্যাপ ইত্যাদি সোশাল সাইটের মাত্রাছাড়া আসক্ত হয়ে পড়ছি। এই অ্যাডিকশন থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া-শোনার মারাত্মক ক্ষতি হয়, বড়দের ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে পড়ে, ক্ষিদে নষ্ট হয়, মানসিক ভারসাম্যও নষ্ট হতে পারে। ১১. মেমরি প্রবলেমঃ ফোনে বেশি কথা বলায় অভ্যস্ত যারা, তাদের মস্তিষ্কে গ্লুকোজ ধারণ কম হয়। যার ফলে স্প্যটিয়াল ওয়ার্কিং মেমরি ব্যহত হয়। ১২. অন্যান্য সমস্যাঃ মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে ঘাড়ের যন্ত্রণা, পিঠ ও কোমরের যন্ত্রণা, জয়েন্ট-পেন, ট্যকিকার্ডিয়া বা হৃৎপিণ্ডের গতি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রতিকারের উপায় ১. মোবাইল ফোন হচ্ছে কম পাওয়ারের রেডিও-ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিটার, যা ৪৫০ থেকে ২৭০০ মেগাহার্য (MHz) বিচ্ছুরণ ঘটায়। ৩০-৪০ সেন্টিমিটার দূরে রেখে মোবাইল ব্যবহার করলে রেডিয়েশনের ভয় থাকে না। ২. শরীর থেকে ফোন যথাসম্ভব দূরে রেখে কথা বলার অভ্যাস করলে, কান ও হাতে স্কিন ক্যানসারের ভয় থাকে না। ৩. স্পিকার অন্‌ করে মোবাইলে একটু দূর থেকে কথা বলার অভ্যাস করতে পারলে ভালো। ৪. তার যুক্ত হেড সেট ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। ৫. কানে ব্লু-টুথ লাগিয়ে কথা বলা নিরাপদ নয়। কারণ ব্লু-টুথ থেকে সমমাত্রার রেডিয়েশন নির্গত হয়। ৬. টেক্সট মোর, টক লেস (text more talk less) – ছোট ছোট তথ্য আদান প্রদানের জন্য ফোন না করে টেক্সট ম্যাসেজ করুন। ইন্টারনেট অ্যাকসেস-এর সুযোগ থাকলে মেল করে ভাব-বিনিময় করা যেতে পারে। ৭. পকেটে মোবাইল রাখবেন না। মোবাইলের ভাইব্রেশন থেকে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা হতে পারে এবং স্পার্ম কাউন্ট কমে যেতে পারে। ৮. মোবাইলে সিগন্যাল যখন কম থাকে তখন রেডিয়েশন বেশী হয়। সেজন্যে বদ্ধস্থানে ফোন করবেন না। ৯. মোবাইল ফোন কেনার সময় SAR নম্বর (Specific Absorption Rate) দেখে কিনবেন। SAR লেভেল ১.৬ ওয়াট পার কিলোগ্রামের কম হলে তবেই তা নিরাপদ। মনে রাখবেন, SAR নম্বর যত কম হবে তত ভালো। ১০. বেড-টাইম মোবাইল কারফিউ – কেউ কেউ রাতে শুতে যাবার আগে মোবাইল নিয়ে অতিরিক্ত ঘাঁটাঘাটিতে ব্যস্ত থাকেন। ঘুমের দফারফা আটকাতে এই কু-অভ্যাস ত্যাগ করুন। এতে করে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও ক্ষতি হয়। ১১. ফেসবুক হলিডে – এক দু’ মাস পরে পরে অন্তত পক্ষে দিন তিনেক মোবাইলে ফেসবুক ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। ১২. সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্টিং – দশদিন অন্তর অন্তর সম্পূর্ণ একটা দিন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন। ১৩. ইউজ মোবাইল হোয়েন ইউ আর মোবাইল (use mobile when you are mobile) – আপনি যখন বাইরে কাজে-কর্মে আছেন তখন পরিমিত মোবাইল ব্যবহার করুন। ঘরে থাকলে ল্যান্ড-লাইনে কথাবার্তা বলুন। ১৪. সারাদিনে এক থেকে দেড় ঘণ্টার বেশি মোবাইলে কথা বলবেন না। ১৫. ডিসইনফেক্ট ইওর মোবাইল – বিভিন্নভাবে আপনার মোবাইলে নানান ধরনের জীবানু বাসা বাঁধে। সঠিকভাবে প্রতিদিন সেলফোনকে জীবানুমুক্ত করতে হবে। ১৬. দেহের ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী করুন – বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ খাবার আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অটুট রাখে। বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ গাজর, ক্যুরকামিন-সমৃদ্ধ হলুদ, ফাইটো-নিউট্রিয়েন্ট অ্যালিসিন-সমৃদ্ধ রসুন ইত্যাদি মানবদেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিবিধ মারণরোগের প্রভাবমুক্ত রাখে। আনারসের ব্রোমেলোইন, ইমিউন বুস্টিং অ্যামাইনো অ্যাসিডদের কার্যক্ষমতাকে অটুট রাখে। বাজারে পাওয়া গেলে কাঁচা আমলকী, কাঁচা গাজর, আনারস খান। সপ্তাহে অন্তত তিনদিন ২ চামচ করে কাঁচা হলুদের রস খান। রাত্রে ডিনারের সাথে সপ্তাহে ২ দিন

bengali

বিভিন্ন ফল পাকাতে ব্যবহৃত কেমিক্যাল থেকে কি হতে পারে নানাবিধ নার্ভ ও মানসিক রোগ?

Do Fruit Chemicals cause Neuro-Psychiatry Diseases? Author : Dr. Jakir Hossain Laskar, PhD আমাদের খাদ্য তালিকায় রোজ দু’একটা ফল থাকলে ভালো। পুষ্টি-বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে সাধ্যের বাইরে গিয়েও আমরা অনেকেই চেষ্টা করি ফলমূল খাবার। কিন্তু সেই ফল পাকাতে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক ডেকে আনছে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানান বিপদ। সুস্থ বা অসুস্থ সবাইকে আমরা, ডাক্তারবাবুরা, ফলমূল খাবার পরামর্শ দিই। যে ঋতুতে যেসব ফল সহজলভ্য, তা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন ধরনের ফলে খুবই উন্নতমানের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা মানব-মস্তিকে অক্সিজেন সরবরাহে সাহায্য করে ও ব্রেন-ফাংশান স্বাভাবিক রাখতে কার্যকরী ভূমিকা নেয়। এছাড়া ফলের উপাদানের মধ্যে থাকা বিশেষ ধরণের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর ফ্রি-র‍্যাডিক্যালসগুলোকে ধ্বংস করে দেহের নিউরো-ট্রান্সমিশন সিসটেমকে চাঙ্গা রাখে ও সার্বিকভাবে শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার-কে ব্যাকটিরিয়া ভাইরাস ইত্যাদির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। কিন্তু প্রকৃতির অনন্য সৃষ্টি এই ফলগুলি পাকাতে বর্তমানে যে সব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তাদের ক্ষতিকর প্রভাবে দেখা দিচ্ছে নানান জটিল স্নায়ুরোগ ও মনোরোগ। ফল পাকাতে কি কি রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়? ফলকে পরিপক্ক করতে প্রধানতঃ ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও ইথিলিন ব্যবহার করা হয়। ক্যালসিয়াম কার্বাইড জলের সংস্পর্শে এসে অ্যাসিটিলিন-এ রুপান্তরিত হয়, যা ফলকে তাড়াতাড়ি পাকাতে সাহায্য করে। এছাড়া প্রোপিলিন, ইথরেল (অন্য নাম, ২-ক্লোরোইথিল ফসফোনিক অ্যাসিড), গ্লাইকল, ইথানল ইত্যাদি আজকাল যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। রাসায়নিকের সাহায্যে কি কি ফল পাকানো হয়? কলা, আম, তরমুজ, আতা, সবেদা, অ্যাপ্রিকট, পেঁপে, নাশপাতি, গুয়াভা ইত্যাদি ফল পাকাতে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়ে পাকা ফল অনেক বেশী সুস্বাদু ও খাদ্যগুনসম্পন্ন। ফল পাকানোর রাসায়নিক থেকে কি কি নার্ভ ও মানসিক রোগ হয়/ হতে পারে? ১. মুড ডিসঅর্ডার – আবেগে বিকারগ্রস্ত এই ধরনের রোগীরা কিছুদিন খুব হৈ-চৈ আনন্দ-আহ্লাদে দিন কাটায়, মাঝের বেশ কিছুদিন মোটামুটি স্বাভাবিক মানসিক স্থিরতায় দিন অতিবাহিত করে, আর কিছুকাল অন্তর গভীর দুঃখ-দুশ্চিন্তা ও অবসাদে ডুবে যায়। সাইক্লোথাইমিক পার্সোনালিটি বা আবর্তনশীল ব্যক্তিত্বের বিকারে আক্রান্ত রোগীদের পর্যায়ক্রমে এই তিন রকমের মুড পরিবর্তন দেখা যায়। ২. এপিলেপটিক স্যিজার – এই পরিস্থিতিতে রোগীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গে খেঁচুনী শুরু হয়। মাথা ঘুরে পরে যাবার উপক্রম হয়। লক-জ্য, মুখ বেঁকে যাওয়া, দাঁতের পাটি পড়ে যাওয়া, ইত্যাদি লক্ষণ ও থাকতে পারে। ৩. মাথার যন্ত্রণা ও মাথা ঘোরা – মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা হলে অনেকেই মাথায় গামছা বা ওড়না দিয়ে শক্ত করে বাঁধে। কারুর বা আবার রোদে বের হলে মাথার যন্ত্রণা ও মাথা ঘোরা শুরু হয়। ৪. মেন্টাল কনফিউশন – ফলের বিষাক্ত রাসায়নিকের প্রভাবে মস্তিষ্কে ডোপামিন, সেরোটনিন-এর ক্ষরণ ব্যাহত হলে, মানসিক ভারসাম্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। রোগীর মধ্যে দেখা দেয় আত্মবিশ্বাসের অভাব, ফলস্বরূপ হীনমন্যতা ও সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। ৫. সেরিব্রাল ইডেমা – নার্ভের এই রোগে নানবিধ স্নায়বিক গোলযোগ দেখা দেয়। হাত-পা কাঁপা, মাথার যন্ত্রণা, ঘাড়ে পিঠে ব্যাথা ইত্যাদি লক্ষণ থাকতে পারে। ৬. অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া – ঘুমের সমস্যায় রোগী রাত্রে বিছানায় শুয়ে ছটফট করে কিন্তু দু’ চোখের পাতা এক করাতে পারে না। স্বল্পস্থায়ী ঘুমের জন্যে প্রাতে ঘুম থেকে উঠে প্রচণ্ড ক্লান্তি অনুভব করে। ছোটরা মাঝরাতে ঘুম ভেঙে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে। কারো কারো স্লিপ-টেররের জন্য ঘুমের মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ ও দুঃস্বপ্ন সংক্রান্ত বিশৃঙ্খলার সমস্যা দেখা দিতে পারে। ৭. মেমরি লস বা স্মৃতিভ্রংশতা – এই সমস্যায় শিক্ষার্থীদের মনে রাখার ক্ষমতা হ্রাস, পড়াশোনায় অমনযোগীতা ও একাগ্রতার অভাব লক্ষ্য করা যায়। বড়োদের ভুলে যাওয়া ও মনোসংযোগের ঘাটতি দেখা দেয়। ওয়ার্কিং মেমরি, স্প্যাটিয়াল মেমরি, এপিসোডিক মেমরি ইত্যাদির সমস্যা হতে শুরু করে। ফল পাকানো রাসায়নিক থেকে ব্রেণ-এ কি পরিবর্তন হয়? ক্যালসিয়াম কার্বাইড, অ্যাসিটিলিন, ইথিলিন প্রভৃতির ক্ষতিকারক প্রভাবে মস্তিষ্কে মোনো-অ্যামাইন অক্সিডেজ-এর ক্ষরণ হ্রাস পায়। কখনো কখনো সেরিব্রাল কর্টেক্স, হিপ্পোক্যাম্পাস ও অ্যামাইগডালয়েড নিউক্লিয়াস-এর মধ্যেকার সেতুবন্ধন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। যার প্রভাবে মুড স্যুয়িং, কিলার ইনস্টিংট, অ্যান্টেরোগ্রেড অ্যামনেসিয়া (যাতে রোগী রিসেন্ট মেমরি ভুলে যায়), থট-ব্লকিং ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। ক্যালসিয়াম কার্বাইড একটি কার্সিনোজেনিক পদার্থ। এর বিষাক্ত প্রভাবে শরীরে ক্যানসার হবার প্রবণতা বাড়তে পারে। এছাড়া এতে স্বল্প পরিমান আর্সেনিক থাকে, যার প্রভাবে আর্সেনিক পয়জনিং হতে পারে। কৃত্রিম উপায়ে পাকানো ফল চিনবেন কিভাবে? কেমিক্যালের সাহাযে পাকানো ফলের গায়ের রঙ সবুজ-হলুদ ছোপ-ছোপ হয়ে থাকে। পুরোটা হলুদ রঙের হয় না। বাজার থেকে কিনে আনা ফল এক বালতি জলে ডুবিয়ে দিন – যদি ডুবে যায় তাহলে তা প্রাকৃতিক উপায়ে পাকানো। আর যদি ভেসে ওঠে তাহলে তা কৃত্রিম রাসায়নিক ব্যবহার করে পাকানো। কিভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা যায়? কেনার আগে ফল-বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করে জানুন যে, ফলটি প্রাকৃতিক উপায়ে পাকানো কিনা। খাবার আগে ফলগুলি রানিং ওয়াটারে (জলে) ভালোভাবে ধুয়ে নিন। বাড়ীর কিচেন গার্ডেন-এ পেঁপে, আম, কলা, সবেদা ইত্যাদির চাষ করতে পারেন। ভেজালের বিষ থেকে নিজেকে ও পরিবারকে বাঁচাতে গৃহ-সংলগ্ন বাগানে ফল-সবজি চাষ করা যেতেই পারে। আর, কখনো রাস্তা-ঘাটের দোকানের কাটা ফল একদমই খাবেন না। ক্যানড্‌ ফ্রুট-জ্যুস বা ফ্রুট বেভারেজ সর্বদা এড়িয়ে চলবেন। খেতে হলে প্রাকৃতিক উপায়ে পাকানো টাটকা ফল খাওয়াই ভালো। এইসব নার্ভ ও মানসিক রোগের চিকিৎসা কিভাবে করা হয়? হোমিওপ্যাথিক ঔষধ বিজ্ঞানে এই সব নার্ভ ও মানসিক রোগের সুফলদায়ক চিকিৎসা আছে। রোগের লক্ষণসমূহ বিশ্লেষণ করে কনস্টিটিউশনাল হোমিওপ্যাথিক ড্রাগ ও মেটেরিয়াল ডোজ থেরাপিউটিক মেডিকেশনের সাহায্যে চিকিৎসা শুরু করা হয়। এছাড়া মাইক্রো-ডোজ ক্লাসিক্যাল মেডিসিন-এর সাহায্যে স্নায়ুরোগের ফলপ্রসু চিকিৎসা আধুনিক হোমিওবিজ্ঞানের প্রমানিত সাফল্য। হোমিওপ্যাথিতে মুড স্ট্যাবিলাইজার হিসাবে বিশেষ কয়েকটি ঔষধও খুবই কার্যকরী। সঙ্গে নানাবিধ অস্বাভাবিক আচরণের প্রতিকারে বিহেভিয়ার মডিফিকেশন থেরাপী, সাপোর্টিভ সাইকোথেরাপী, ক্রাইসিস ইন্টারভেনশন এণ্ড ইনস্ট্রুমেন্টাল কণ্ডিশনিং, রেসিপ্রোকাল ইনহিবিশন টেকনিক-এর অধীনে মুড ও কন্ডাক্ট মডিফিকেশন থেরাপী চালিয়ে যেতে হবে।

Scroll to Top
Call Now Button